價格:免費
更新日期:2017-11-15
檔案大小:29M
目前版本:2.1
版本需求:Android 4.4 以上版本
官方網站:http://store.ictd.gov.bd
Email:ictdivision.bd@gmail.com
聯絡地址:ICT Tower Information And Communication Technology Division (ICTD) E-14/X, BCC Bhaban, Agargaon, Dhaka-1207
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্ব ইতিহাসে যুগসৃষ্টিকারী সেরা ভাষণগুলোর একটি। বাঙালির মুক্তির সড়ক নির্মাণে অনন্য-দূরদর্শী ভাষণ এটি। মাত্র ১৯ মিনিটের এ ভাষণে ভাব, ভাষা, শব্দ চয়ন মানব যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় উপাদানে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি বাক্য প্রয়োগে উঠে এসেছে একটি জাতির ইতিহাস, আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের সংগ্রাম ও জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা। এতে রয়েছে দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে পাকিস্তানি স্বৈরশাসক, বণিক, শিল্পপতি Ñ যারা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর শোষণ ও নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছিলেন, তাদের কবল থেকে মুক্তির কথা। ভাষণে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মুক্তির দাবি; পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন থেকে বাঙালির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার অর্জনের কথা। উচ্চারিত হয়েছে মুক্তি ও স্বাধীনতা অর্জনের জন্য জনগণকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান; কোন কৌশলে যুদ্ধ ও জনযুদ্ধ পরিচালিত হবে তার নির্দেশনা। এছাড়া ঘোষণা করা হয়েছে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের জন্য সর্বাত্মক ত্যাগ স্বীকারের বজ্রশপথ।
৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে উচ্চারণ করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম Ñ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ কেননা, স্বাধীনতা যতটা রাজনৈতিক-ভৌগোলিক, মুক্তি ততটাই অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক। এটাই ছিল মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা এবং তা অর্জনের জন্য সর্বস্তরের জনগণকে প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান। একটি জাতি স্বাধীন হলেই মুক্ত হয় না। বঙ্গবন্ধু সেই মুক্তি চেয়েছিলেন, যা স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলে। এজন্যই তিনি প্রথমে মুক্তি ও পরে স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন। মুক্তি মানে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সকল ধরনের শোষণ-বৈষম্য থেকে মুক্তি।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাক্য যেমন ছিল খুবই যুক্তিনির্ভর, তেমনি অর্থবোধক। তবে তার জন্য বঙ্গবন্ধুর কোনো পূর্বপ্রস্তুতি ছিল বলে মনে হয় না, কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে একটি মহাকাব্য রচিত হয়েছিল এই ভাষণে। অসাধারণ এই ভাষণে তিনি উচ্চারণ করেছিলেন অত্যন্ত গভীর ও অর্থবহ বাক্য এবং শব্দ। ভাষণের বাক্যগুলো তিনি কখনও উচ্চারণ করেছেন প্রমিত বাংলায়, আবার কখনও আঞ্চলিক ভাষায়। আঞ্চলিক শব্দ সহযোগে আঞ্চলিক ক্রিয়াপদ ব্যবহার করে মুহূর্তের মধ্যেই বাঙালি চরিত্রের যাবতীয় বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরেছেন তিনি।
সর্বোপরি ভাষণে বঙ্গবন্ধু প্রতিটি বাক্য ও শব্দ উচ্চারণে রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। একটু এদিক-সেদিক হলেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনতে পারে, এমন ভেবেই তিনি অতি সতর্কতার সঙ্গে উচ্চারণ করেছেন প্রতিটি শব্দ। ভাষণে অপরিহার্যভাবে স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পৌঁছার সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়। গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির আদর্শ প্রতিষ্ঠায় এ দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে যে লড়াই-সংগ্রাম করে আসছিল ৭ই মার্চের জনসভায় বঙ্গবন্ধু তা আরও স্পষ্ট করেন। এবং এটাই ছিল বাংলার জনগণের প্রত্যাশা। বঙ্গবন্ধু তাঁর অনন্য বাগ্মিতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার আলোকে তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বাঙালি জাতির আবেগ, স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষাকে এক সুতোয় গাঁথেন।